নির্বাচনী ইশতেহার

**

 

জনগণের প্রকৃত গণফ্রন্ট প্রতীকে ভোট দিজিি
ক্ষমতারন গণফ্রন্ট এর নির্বাচনী ইশতেহার

29/2/২০০৮
We want Democracy not Plutocracy. কালো টাকার প্রভাবমুক্ত সুস্থ ধারার গণতন্ত্র কাম্য।
কার্যালয় : ৫৯, পুরানা পল্টন, থালা-পল্টন, ঢাকা-১০০০। যোগাযোগ : ২৪/১-এ তোপখানা রোড, থানা : গল্টন, ঢাকা-১০০০, ফোন : ০১৫৫২৪২০৮৬৭ (নির্বাহী চেয়ারম্যান) ০১৯১৪৮৭৯০৬৫ (মহাসচিব)

 

We want democarcy not plutocracy অর্থাৎ কালো টাকার প্রভাবমুক্ত সুস্থ ধারার গণতন্ত্র কাম্য। সৎ, যোগ্য দেশ প্রেমিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের প্রকৃত ন্যায় ভিত্তিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করণের মাধ্যমে একটা প্রকৃত কল্যাণ রাষ্ট্র কাঠামো ও ভারসাম্যমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে ইসলামী মূল্যবোধ ও জাতীয়তাবাদী দর্শনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল গণফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ।

 

নিরাপত্তা সহ মৌলিক অধিকার সমূহ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। রাষ্ট্রীয় শাসন কাঠামোর পরিবর্তন করে জনগণের প্রকৃত ক্ষমতায়নের শাসন কাঠামো আজও তৈরি ও বাস্তবায়ন

স্বাধীনতার পরবর্তী ৩৮ বছরে বিদ্যমান সমাজ কাঠামোর অসঙ্গতির কারণে জনগণের প্রকৃত রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, সামাজিক হয়নি। ফলে সন্ত্রাস, রাহাজানি, হত্যা, ভূমি দখল, টেন্ডার ও ব্যালট ও বক্স ছিনতাইয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় রক্তাক্ত হয়েছে রাজপথ। জন জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিগত সরকারগুলো। গণফ্রন্ট জনগণের প্রকৃত ক্ষমতায়নের বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশ যে সকল সমস্যা ও সংকটনের সম্মুখীন তা সমাধান করতে আমরা রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনে বিশ্বাসী। গত ৩৮ বছরে বাংলাদেশে যতগুলি রাজনৈতিক দল জগণের খেদমতের কথা বলে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে এবং জণগনই ক্ষতার উৎস বলে রাজনৈতিক দর্শন দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে জনগণ ৫ বছর পরপর শুধুমাত্র একটি ভোটের মালিক। নির্বাচনী পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের কার্যক্রমের জবাবদিহি চাওয়ার কোন ক্ষমতা কোন ভোটার সাধারণ নাগরিকের নেই। বাংলাদেশের জনগণ বিদ্যমান সমাজকাঠামোর অসঙ্গতির কারণে প্রকৃত পক্ষে ক্ষমতার উৎস নয়। জনগণকে ক্ষমতায়নের বাস্তবধর্মী রাস্ট্রীয় কাঠামোর একটি রূপরেখা গণফ্রন্ট নির্বাচনী ইশতেহারে প্রকাশ করছে।

রাষ্ট্র ব্যবস্থায় প্রকৃত গণতন্ত্রের রূপরেখা

আইন প্রনয়ন ব্যবস্থার গণতান্ত্রয়ন ও আইন ও নীতি প্রণয়নে জনগণের অংশগ্রহণের জন্যে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা স্থানীয়, জাতীয় ও গণসংসদ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা। আইনের খসড়া স্থানীয় সংসদে (ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা) পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা। প্রত্যেক সংসদ তার নিজস্ব এলাকার জনগণের সমস্যার সমাধানের জন্য নীতি নির্ধারণ ও আইন প্রণয়ন করবে এবং বাজেট প্রনয়ন করবে।

নির্বাহী ব্যবস্থা গণতন্ত্রায়ন ও প্রশাসনে জনগনের অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধিধের দ্বারা (ইউনিয়ন, খানা, জেলা) পরিষদ এবং জাতীয় পরিষদ (মন্ত্রী পরিষদ) ব্যবস্থার প্রচলন করা। প্রতি স্তরের পরিষদ তার নিজস্ব সংসদের সিদ্ধান্ত সমূহ বাস্তবায়ন করবে।

বিচার ব্যবস্থার গণতান্ত্রয়ন ও বিচার কার্যে জনগণের প্রতিনিধিত্বের জন্য জনগণের নাগালের মধ্যে ইউনিয়ন, থানা, জেলা) কোর্ট স্থাপন, জুরি ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পুলিশী ব্যবস্থার সাথে বিচার বিভাগ ও জনগণের প্রতিনিধিদের অংশ গ্রহণের প্রচলন করা।

প্রতিনিধি পদ্ধতির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ক্ষমতার বিকেন্দ্রায়ন, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাব দিহিতা ভোটারদের কাছে নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে (i) নির্বাচনী এলাকার সকল শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিদের নিয়ে স্থানীয় সংসদ ও স্থানীয় পরিষদ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, (ii) নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধি (এম.পি) সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সংসদের সিদ্ধান্ত সমূহ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করার ব্যবস্থা করা জাতীয় সংসদ সদস্যকে স্থানীয় সংসদে জবাবদিহি করার পদ্ধতি প্রচলন করা। (iii) এলাকার স্থানীয় সংসদে অনাস্থা ঘোষিত হলে জাতীয় সংসদ সদস্যপদ বাতিলের নিয়ম করা। এভাবে ভোটারদের কাছে নির্বাচিত প্রতিনিধি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার নীতি বা আইন করলে ক্ষমতার কেন্দ্রায়ন ও অপব্যবহার এবং দূনীর্তি ও দুবৃত্তায়নের অবসান হবে।

ইউনিয়ন সংসদ ও ইউনিয়ন পরিষদ ঃ-ইউনিয়ন সংসদের সদস্য হবেন ইউনিয়ন ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত ইউনিয়নের চেয়ারম্যন, ভাইস চেয়ারম্যান এবং প্রত্যেক ওয়ার্ড হতে নির্বাচিত ওয়ার্ড সদস্যগণ। সকল পেশাজীবী সমিতির নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ, প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও একজন শিক্ষক প্রতিনিধি, সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের (মসজিদ মন্দির, গীর্জা ও মঠ) প্রধান তথা ইমাম ও পুরোহিতগণ সামাজিক সাংস্কৃতিক, ক্রিয়া সংগঠনের নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ ও সকল রাজনৈতিক দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদনগণ ইউনিয়ন সংসদ সদস্যদের ভোটে সংসদ সদস্য হতে হবে। ইউনিয়ন সংসদ সদস্যদের ভোটে ইউনিয়ন পরিষদ (প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও শ্রম বিন্যাস, তথ্য ও সংবাদ, যোগাযোগ ও পরিবহন, ত্রান ও দুর্যোগ ইত্যাদি প্রয়োজনীয় বিষয় সমূহ); বিচার পরিষদ (প্রত্যেক ওয়ার্ড হতে একজন নির্বাচিত বিচার সদস্য নিয়ে) এবং বিধিবদ্ধ কমিশন (নির্বাচন, অর্থ ও পরিকল্পনা, মানবাধিকার) গঠিত হবে। চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান এবং ভাইস চেয়ারম্যান উপ প্রধানের দায়িত্ব পালন করবে। ইউনিয়ন পরিষদ ইউনিয়ন সরকার পরিচালনা করবে। ইউনিয়নের সকল সমস্যা ইউনিয়ন সংসদে আলোচনার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যকরী করবে। ইউনিয়নের জনগণ যাতে কর্ম সংস্থান ও শ্রমদানের মাধ্যমে অন্ন, বস্ত্র, গৃহ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ইত্যাদি চাহিদা পূরণ করে সুখ শান্তিময় জীবন যাপন করতে পারে সেই লক্ষ্যে ইউনিয়ন সংসদ ও ইউনিয়ন পরিষদ কাজ করবে। কেন্দ্রীয় সরকার ও ঊর্ধ্বতন স্থানীয় সরকারের প্রদত্ত দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদ কার্যকর করবে। ইউনিয়নের নির্বাহী ব্যয় ইউনিয়নবাসীর প্রদত্ত কর এবং ঊর্ধ্বতন স্থানীয় সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার প্রদত্ত অনুদান হতে নির্বাহ করা হবে। ইউনিয়নের জনগণ কর্ম সংস্থানের মাধ্যমে উৎপাদন ব্যবস্থা নিযুক্ত হওয়ার সামর্থ্য অর্জনের জন্য প্রত্যেক ইউনিয়নে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ তহবিল গড়ে তুলতে হবে। এই তহবিলে কমপক্ষে ৬০% হবে ইউনিয়নবাসীর সঞ্চয়; ২০% হবে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহের বিনিয়োগ বাকী ২০% কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিনিয়োগ। ইউনিয়ন স্তরের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান প্রকল্প সমুহ এই তহবিলের অর্থে পরিচালিত হবে এবং সুবিধামত জাতীয় উন্নয়ন প্রকল্পে তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ করা যবে। তবে এই তহবিলের অর্থ ইউনিয়নের নির্বাহী ব্যয়ে খরচ করা যাবে না। ইউনিয়ন অর্থ ও পরিকল্পনা পরিষদ এই তহবিল পরিচালনা করবে। ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক প্রণীত বাজেট ইউনিয়ন সংসদে আলোচিত ও গৃহীত হবে। সকল পেশাজীবি সমিতির সভাপতিদের নিয়ে ইউনিয়ন অর্থ ও পরিকল্পনা গঠিত হবে এবং অর্থ ও পরিকল্পনা কমিশনার এই পরিষদের প্রধান হবে। স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও দ্রুত ন্যায় বিচারের জন্য ইউনিয়ন কোর্ট (ফৌজদারী ও দেওয়ানী) প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যার বিচারক জাতীয় বিচার পরিষদের সুপারিশ ক্রমে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক নিয়োজিত হবে। থানা বিচার পরিষদ কর্তৃক ইউনিয়ন কোর্টের জুরী নিযুক্ত হবে। ইউনিয়ন সংসদ সদস্যদের ভোটে ইউনিয়ন সংসদের স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার নির্বাচিত হবে। বৎসরে কমপক্ষে তিনবার সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং স্পীকার এই সভা আহ্বান করবে।

 

থানা বা উপজেলা সংসদ ও উপজেলা পরিষদ :-
থানা বা উপজেলা সংসদের সদস্য হবেন-ইউনিয়ন সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান; সকল ইউনিয়ন
চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানগণ, পেশাজীবী সমিতির ইউনিয়ন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ভোটে নির্বাচিত উপজেলা পেশাজীবী সমিতি ও সাধারণ ইমাম ও পুরোহিতদের ভোটে নির্বাচিত প্রত্যেক ধর্মের উপজেলা প্রধানগণ, সামাজিক ও সাস্কৃতিক ও ক্রিয়া সংগঠনের ইউনিয়ন সভপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সম্পাদকগণ: ইউনিয়ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের ভোটে নির্বাচিত উপজেলা শিক্ষক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক: ইউনিয়নের ভোটে নির্বাচিতউপজেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং সকল রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক। উপজেলা সংসদ সদস্যদের ভোটে ডেপুটি স্পীকার নির্বাচিত হবেন এবং উপজেলা হতে নির্বাচিত জাতীয় সংদস্য উপজেলা সংসদের স্পীকার হবেন। বৎসরে কমপক্ষে দুবার থানা সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। থানা সচিবালয় থানা পরিষদের অধীনে কাজ করবে।

জেলা সংসদ ও জেলা পরিষদ – জেলা সংসদের সদস্য হবেন উপজেলা সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত জেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, সকল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানগণ ও পেশাজীবী সমিতির ইউনিয়ন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ভোটে নির্বাচিত উপজেলা পেশাজীবী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গণ, ইউনিয়ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক প্রনিধিদের ভোটে নির্বাচিত উপজেলা শিক্ষক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ইউনিয়নের ইমাম ও পুরোহিত দের ভোটে নির্বাচিত প্রত্যেক ধর্মের উপজেলা প্রধানগণ, সামাজিক, সাস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনের ইউনিয়নে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দের ভোটে নির্বাচিত জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ। জেলার সদস্যদের ভোটে এবং জেলা সংসদ সদস্যদের মধ্য হতে জেলা নির্বাহী পরিষদ; জেলা বিচার পরিষদ এবং জেলা বিধিবদ্ধ কমিশন গঠিত হবে। জেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান জেলা পরিষদের প্রধান ও উপ প্রধান রূপে দায়িত্ব পালন করবে। জেলার সকল বিষয় জেলা সংসদে আলোচনার পর সংখ্যা গরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত সিদ্ধান্ত জেলা পরিষদ কার্যকর করবে। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ জেলা পরিষদ কার্যকর করবে। জেলা পরিষদ জেলার বাজেট প্রণয়ন করবে যা জেলা সংসদে আলোচিত হয়ে গৃহিত হবে। স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও ন্যায় বিচারের জন্য জেলা কোর্ট ফৌজাদারী ও দেওয়ানী কোর্ট স্থাপিত হবে এবং জাতীয় বিচার পরিষদ কর্তৃক জেলা কোর্টের জুরী নিয়োজিত হবে। জেলা কোর্টের বিচারক জাতীয় বিচার পরিষদের সুপারিশ ক্রমে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক নিয়োজিত হবে। জেলার নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্যদের মধ্য হতে এবং জেলা সংসদ সদস্যদের ভোটে জেলা সংসদের একজন ডেপুটি স্পীকার নির্বাচিত হবে। জেলা সচিবালয় জেলা পরিষদের অধীনে থাকবে। জেলা জাতীয় সংসদ সদস্যদের মধ্য হতে ১জন স্পীকার নির্বাচিত করবে এবং জাতীয় সংসদ সদস্যগণ জেলা পরিষদের উপদেষ্টা মন্ডলী হিসেবে কাজ করবেন। দেশের পৌর সভা বা সিটি করপোরেশন ঘোষিত শহর গুলোকে আকার ও জনসংখ্যা অনুসারে ইউনিয়ন (ওয়ার্ড সমূহ), থানা ও জেলা সংসদ ও পরিষদের অনুরূপে গঠিত হবে।

জাতীয় সংসদ ঃ-জনসংখ্যা তথা ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে রাষ্ট্রকে নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় বিভক্ত করে প্রতিটা এলাকা হতে ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে একজন জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচন করা হবে। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় প্রতি ২০টা ইউনিয়ন নিয়ে ১টা থানা গঠন করে প্রতি থানা হতে একজন জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচন করা যেতে পারে। এভাবে গঠিত ৫টা থানা নিয়ে একটা জেলা গঠন করা যেতে পারে। জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য দলীয় প্রার্থীর নমিনেশন নির্বাচনী এলাকার দলীয় সমর্থকদের সংখ্যা গরিষ্ঠ ভোটে নির্ধারণ করতে হবে এবং স্থানীয় সংসদে (ইউনিয়ন, থানা জেলা) কম পক্ষে দুবার নির্বাচিত হয়ে সুনামের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে নমিনেশন পাওয়ার জন্য যোগ্য বিবেচনা করা হবে। নির্বাচনের সময় যে দলেরই হোক না কেন নির্বাচিত হওয়ার পর একমাত্র পরিচয় হবে জন প্রতিনিধি বা জাতীয় সংসদ সদস্য। জাতীয় সংসদে স্থায়ীভাবে কোন সরকারী দল বা বিরোধি দল থাকবে না। কারণ সরকারকে সমর্থন বা সরকারের বিরোধিতা করা জাতীয় সংসদের কাজ নয়; সংসদের কাজ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য আইন প্রণয়ন করা এবং যে আইনের মাধ্যমে সরকার সুষ্ঠু ভাবে দেশ পরিচালনা করে দেশের মঙ্গল সাধন করবে। সংসদে উত্থাপিত বিল যে সব সদস্য সমর্থন করতে চান তাদেরকে নিয়ে সমর্থনকারীদ দল এবং বে সব সদস্য বিরোধিতা করতে চান তাহাদেরকে নিয়ে বিরোধী দল গঠন করে সংসদে বিলের উপর আলোচনা ও বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বিল গৃহীত হবে। তাহলে দলের বাধ্যকতা নয় বরং ন্যায় নীতি এবং দেশ ও জগণের প্রতি আনুগত্য রেখে সংসদ সদস্যগণ আইন প্রণয়নে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন।

সর্বোচ্চ পরিষদঃ- দেশের জনগণের (ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন। রাষ্ট্রপতির অধীনে আইন, নির্বাহী এবং বিচার বিভাগ এবং উপ-রাষ্ট্রপতির অধীনে বিধিবদ্ধ কমিশন সমুহ থাকবে। রাষ্ট্রপতি উপরাষ্ট্রপতি, নির্বাহী বিভাগের প্রধান, প্রধানমন্ত্রী, সংসদীয় বিভাগে প্রধান, (জাতীয় সংসদের স্পীকার), বিচার বিভাগের (প্রধান বিচারপতি), প্রধান বিধিবদ্ধ কমিশনার দের নিয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পরিষদ গঠিত হবে। মেয়াদান্তে বা অন্য কোন কারণে সংসদ বা সরকার বাতিল হলে সর্বোচ্চ পরিষদ রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। স্থানীয় সংসদ ও জাতীয় সংসদ সদস্যদের নিয়ে গণ সংসদ গঠিত হবে। যার স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার হবে যথাক্রমে উপ-রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় সংসদের স্পীকার। দেশের নিরাপত্তা ও জনস্বার্থ রক্ষা করা, কর ও বাজেট নির্ধারণ সংবিধান সংশোধন ইত্যাদি বিষয়ে গণসংসদের ভোটের আওতাভুক্ত হবে। কোন বিতর্কিত বিল গণ সংসদের ভোটে প্রেরণের সিদ্ধান্ত সর্বোচ্চ প্রয়োজনীয় জাতীয় গুরুত্ব বিষয়ে বা বিল গন সংসদে প্রেরণের জন্য জাতীয় সংসদের এক তৃতীংশে স্বাক্ষর বা স্থানীয় সংসদ সদস্যদের একদশমাংশ সদস্যের স্বাক্ষর থাকলে উক্ত বিল সর্বোচ্চ পরিষদে বিবেচনা ও গণসংসদের প্রেরণের জন্য গৃহিত হবে। দেশের নতুন সংবিধান গ্রহণ ও সংবিধান সংশোধনের জন্য গণসংসদের ভোট গ্রহণ করতে হবে। প্রতি ১০ বছর পর গণ সংসদে সংবিধান পর্যালোচনা করা হবে। রাষ্ট্রের কোন পদে নির্বাচনের জন্য গণসংসদ সদস্যদের ভোট গ্রহণ করা হবে না। অর্থাৎ গণ সংসদ ইলেকট্রোরাল কলেজ রূপে ব্যবহা করা যাবে না। জাতীয় সংসদ সদস্যদের ভোটে প্রয়োজনীয় সংখ্যাক নির্বাহী প্রধান (প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীগণ) নির্বাচিত হবেন। কেন্দ্রীয় সচিবালয় জাতীয় পরিষদের অধীনে কাজ করবে।

বিচার বিভাগ ঃ- স্থানীয় সংসদ সদস্যদের ভোটে প্রতি স্তরে একটি করে বিচার পরিষদ গঠিত হবে। স্বল্প ব্যয়ে দ্রুত সময়ে ন্যায় বিচার ও কার্য সম্পাদনের লক্ষ্যে (ক) প্রতি ইউনিয়নে (খ) প্রতি উপজেলায় এবং (গ) প্রতি জেলায় একটা ফৌজদারী ও একটা দেওয়ানী কোর্ট স্থাপিত হবে। দেশের রাজধানীতে সুপ্রীমকোর্ট (আপীল বিভাগ) স্থাপিত হবে। কেন্দ্রীয় বা জাতীয় বিচার পরিষদ গঠিত হবে নিম্ন বর্ণিত সদস্যদের নিয়ে :- (ক) প্রধান বিচারপতি (খ) সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারাপতিদের মধ্য হতে তিনজন এবং প্রত্যেক স্থায়ী হাইকোর্টের বিচার পতিদের মধ্য হতে একজন প্রতিনিধি । (গ) প্রধান বিচারাপতি জাতীয় বিচার পরিষদের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন। সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে রাজধানীতে এবং প্রত্যেক বিভাগে একটা স্থায়ী হাইকোর্ট স্থাপিত হবে। জাতীয় বিচার পরিষদের সুপারিশের ক্রমে আপীল বিভাগ ও হাইকোর্টের বিচার পতিদের নিয়োগ রাষ্ট্রপতি দেবেন। জাতীয় পরিষদ কতৃর্ক সুপারিশকৃত এবং সর্বোচ্চ পরিষদের অনুমোদন ক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হবে)।

বিধিবদ্ধ কমিশন সমূহঃ- রাষ্ট্র ব্যবস্থার তিনটা বিভাগে জনবল ও অর্থ সম্পদ (লজিস্টিক) সহায়তা দেয়ার জন্য এবং কর্মসংস্থান, উন্নয়ন পরিকল্পনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, মানবধিকার রক্ষা প্রভৃতি বিষয়ের জন্য বিধিবদ্ধ কমিশন যেমন নির্বাচন কমিশন, কর্ম কমিশন, অর্থ ও পরিকল্পনা কমিশন, ত্রাণ ও দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা কমিশন, মৌলিক মানবাধিকার কমিশন গঠিত হবে। ইউনিয়ন সংসদ সংদস্যদের ভোটে ইউনিয়ন কমিশন সমূহ গঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন, কর্ম কমিশন, অর্থ ও পরিকল্পনা কমিশন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিশন, মৌলিক মানবাধিকার কমিশন সমুহ এবং একই ভাবে উপজেলা ও জাতীয় সংসদ সদস্যদের ভোটে উপজেলা, জেলা ও জাতীয় কমিশনসহ গঠিত হবে।

গণফ্রন্ট প্রদত্ত জনগণের প্রকৃত ক্ষমতায়নের রূপরেখা বস্তবায়নের জন্য জনগণের সমর্থন ও অংশ গ্রহণ অত্যাবশ্যক। গণফ্রন্ট বিশেষ ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়নের বিশ্বাস করে না এবং জনগণকে বিমোহিত (যা বিদ্যমান সমাজ কাঠামো ঠিক রেখে বাস্তবায়ন সম্ভব নয় ) করার স্বপ্ন দেখাতে চায় না বরং স্বপ্নে পসড়া সাজিয়ে একজন কৃষক, একজন শ্রমিক, একজন পেশাজীবী প্রতিনিয়ত তার পারিবারিক সমস্যার সমাধান যেভাবে করে তাদের সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নের পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং প্রকৃত অধিকার সমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় শাসন কাঠামো পরিবর্তনের রূপরেখা গণফ্রন্ট কর্তৃক ঘোষিত ইশতেহারে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হলো। আমাদের বিশ্বাস ইশতেহারে উল্লেখিত জনগণের ক্ষমতায়িত হবার দিক নির্দেশনা বাস্তবায়নে গণফ্রন্ট মনোনীত প্রতীক মাছ মার্কায় ভোট প্রয়োগ করে রাষ্ট্রীয় শাসন কাঠামো পরিবর্তনে অঙ্গীকারাবদ্ধ হন।

এ.কে.এম. রফিক উল্ল্যাহ চৌধুরী চেয়ারম্যান গণফ্রন্ট মোৰাঃ-০১৭১২৬৩৬৬১১
মোঃ জাকির হোসেন সভাপতি, কর আইনজীবি সমিতি নির্বাহী চেয়ারম্যান, গণফ্রন্ট
আহমেদ আলী শেখ , এডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট,  মহাসচিব গণফ্রন্ট